জীবননগরে আঙুর চাষে নতুন দিগন্তের সূচনা, সফল দুই ভাইয়ের দৃষ্টান্ত
বিশেষ প্রতিনিধি মোঃ অমিদ হাসান
দীর্ঘ সময় আমদানি নির্ভর থাকা আঙুরের চাষ এবার দেশেই বাণিজ্যিকভাবে শুরু, চুয়াডাঙ্গার দুই উদ্যোক্তার সফলতায় আশাবাদী কৃষি বিভাগ
দেশে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আঙুরের চাষে সাফল্য পেয়েছেন চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার হাসাদাহ গ্রামের দুই ভাই আশরাফুল ইসলাম (৩৮) ও তরিকুল ইসলাম (৩৫)। সাড়ে তিন বিঘা জমিতে তারা বিদেশি জাতের আঙুর চাষ করে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন।
এই তরুণ উদ্যোক্তারা পার্পেল ও বাইকুনুর জাতের প্রায় ৭৫০টি চারা রোপণ করেন এক বছর আগে। বর্তমানে প্রতিটি গাছে থোকা থোকা করে ঝুলছে সবুজ আঙুর। এখনও পরিপক্ক না হলেও আগামী এক মাসের মধ্যে ফলগুলো খাওয়ার উপযোগী হয়ে উঠবে বলে আশা করছেন উদ্যোক্তারা। তখন ফলের রং বদলে সবুজ থেকে রক্তিম লাল হয়ে উঠবে, আর স্বাদ হবে রসালো ও মিষ্টি।
এই উদ্যোগ শুধু কৃষিতেই নয়, এলাকার অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। আগে যেসব শ্রমিক কর্মহীন ছিলেন, তারা এখন এই আঙুর বাগানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। শ্রমিক হাসেম আলী বলেন, “এই বাগানের কারণে আমরা অনেকেই কাজের সুযোগ পেয়েছি। আগে অলস সময় কাটত, এখন রোজগার হচ্ছে।”
বাগান দেখতে দূরদূরান্ত থেকেও আগ্রহীরা আসছেন। ঝিনাইদহ শহর থেকে আগত দর্শনার্থী সবুর খান বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ায় গল্প শুনেই এখানে এসেছি। এমন সফলতা আমাদের মতো তরুণদের অনুপ্রাণিত করে।”
কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকেও মিলছে পরামর্শ ও সহায়তা। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শিমুল পারভেজ বলেন, “চাষের শুরু থেকে আমরা সব ধরনের কারিগরি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।”
জীবননগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, “এই অঞ্চলের মাটি আঙুর চাষের জন্য উপযোগী। চলতি মৌসুমে পুরো উপজেলায় প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে আঙুর চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে আশরাফুল-তরিকুল ভাইদের বাগানে সবচেয়ে ভালো ফলন হয়েছে।”
দেশের আমদানি নির্ভর এ ফলের সফল চাষের মাধ্যমে জীবননগরের কৃষকরা একটি নতুন সম্ভাবনার দিক উন্মোচন করেছেন। আশা করা হচ্ছে, ভবিষ্যতে আরও অনেক উদ্যোক্তা এই পথে এগিয়ে আসবেন।
Leave a Reply