ঝিনাইদহে ভ্যান চালককে হত্যা,১৯ বছর পর ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড!
বিশেষ প্রতিনিধি মোঃ অমিদ হাসান
ঝিনাইদহে চাঞ্চল্যকর ভ্যানচালক রবে হত্যা মামলার রায়: চারজনের যাবজ্জীবন, খালাস ১১ জনের
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বহুল আলোচিত বিষয়খালী গ্রামের ভ্যানচালক রবিউল ইসলাম ওরফে রবে হত্যাকাণ্ডের ১৮ বছর পর বহুল প্রতীক্ষিত রায় ঘোষণা করেছে আদালত। সোমবার (২৩ জুন) বিকেলে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এর বিচারক উৎপল কুমার ভট্টাচার্য এই রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে চারজন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মামলার বাকি ১১ আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় সব আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন:
মাজেদুল ইসলাম ওরফে মাজু – পিতা: হাবিবুর রহমান
রসুল – পিতা: আশরাফ
আজিজুল – পিতা: মৃত আফজাল হোসেন
গোলাম রসুল – পিতা: মৃত শামসুদ্দিন
এজাহারভুক্ত ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান খুরশীদ আলম মিয়াসহ মোট ১১ জন।
নিহত রবিউল ইসলাম (রবে) ছিলেন সদর উপজেলার বিষয়খালী গ্রামের মৃত ইনছার আলী শেখের ছেলে। পেশায় তিনি একজন ভ্যানচালক ছিলেন।
২০০৬ সালের জানুয়ারির ১০ তারিখ রাতে তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নেয় আসামি আজিজুলসহ আরও কয়েকজন। এরপর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন তিনি।
দীর্ঘ তিন মাস পর ওই বছরের ৪ এপ্রিল হুমোদা বিলে খালের দক্ষিণ পাড়ে মাটিচাপা অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতের ভাই আনোয়ার হোসেন তার মরদেহ শনাক্ত করেন এবং একই দিন ঝিনাইদহ সদর থানায় ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
হত্যাকাণ্ডের পেছনের কারণ কী ছিল?
মামলার তদন্ত ও শুনানিতে জানা যায়, নিহত রবিউলের স্ত্রী আইরিন খাতুনের সঙ্গে আসামি গোলাম রসুলের অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে গ্রাম্য শালিসে গোলাম রসুলকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ ঘটনার পর থেকেই আসামিরা রবিউলের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল। তারা তৎকালীন ইউপি মেম্বার খুরশীদ আলমের অনুসারী ছিল।
শালিসের পরদিনই পরিকল্পিতভাবে রবিউলকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।
দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়ার শেষে রায়:
মামলার শুনানি ও বিচারকার্য প্রায় দুই দশক ধরে চলে। ২০২৪ সালের ৩ আগস্ট রায় ঘোষণার দিন ধার্য থাকলেও তা ঘোষণা করা হয়নি। এভাবে আরও চারবার দিন ধার্য হলেও শেষপর্যন্ত সোমবার ২০২৫ সালের ২৩ জুন বিকেলে চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হয়।
রায়ে প্রতিক্রিয়া:
রায়ের পরে নিহতের পরিবার আদালতের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “যদিও দেরিতে ন্যায়বিচার মিলেছে, তবে আমরা সন্তু
ষ্ট। আশা করছি এখন রবির আত্মা শান্তি পাবে।”
Leave a Reply