মহেশপুরে ড্রাগন চাষে ভাগ্যবদল: প্রতিদিন ২০ লাখ টাকার বেচাকেনা
বিশেষ প্রতিনিধি মোঃ অমিদ হাসান
ঝিনাইদহের মহেশপুরে ড্রাগন চাষ করে অনেক কৃষক হয়েছেন কোটিপতি। প্রতিদিন মহেশপুর বাজারে ২০–২৫ লাখ টাকার ফল বেচাকেনা হয়।
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার গৌরীনাথপুর গ্রাম এখন পরিচিত ‘ড্রাগনের রাজধানী’ নামে। কারণ, প্রতিদিন এখানে ড্রাগন ফলের বেচাকেনা হয় প্রায় ৫ থেকে ১০ কোটি টাকার। এই এলাকার কৃষকদের জীবনযাত্রায় এসেছে মারাত্মক পরিবর্তন। অনেকে হয়ে উঠেছেন কোটিপতি।
বর্তমানে মহেশপুর ও আশপাশের গ্রামগুলোর শতাধিক কৃষক বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন ফল চাষ করছেন। ১ বিঘা জমি থেকে বছরে ৮–১০ লাখ টাকা আয় করছেন তারা। বাজারে এখন রয়েছে ৭৮টি আড়ৎ, যেখান থেকে দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকাররা ফল কিনে নিয়ে যান।
চাষি মোঃ. মোল্লা মজনু শিক্ষক বলেন:
“তিন বছর আগে ধান চাষ ছেড়ে ড্রাগন শুরু করি। এখন বছরে প্রায় ১৫ লাখ টাকার ফল বিক্রি করছি। এই ফল চাষ আমাদের বাঁচিয়ে দিয়েছে।”
মহেশপুরে এখন প্রায় ৩১৬ হেক্টর জমিতে ড্রাগন চাষ হচ্ছে। জুন-জুলাই মৌসুমে প্রতিদিন হাজার হাজার কেজি ফল বিক্রি হয়। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দামও ভালো পাচ্ছেন চাষিরা।
ড্রাগন চাষ কেন্দ্র করে প্রায় ২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। আড়তদার, পরিবহন শ্রমিক, কুলি, দোকানি—সবারই জীবিকা এখন এই বাজারের ওপর নির্ভরশীল।
এই বিশাল বাজারেও নেই হিমাগার, ফল সংরক্ষণের ব্যবস্থা বা প্রক্রিয়াজাতকরণ ইউনিট। ফলে অনেক সময় ফল নষ্ট হয়ে যায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান:
“গৌরীনাথপুরের মাটি ও জলবায়ু ড্রাগন ফলের জন্য উপযুক্ত। চাষি প্রশিক্ষণ ও সরকারি সহায়তা পেলে এটি আন্তর্জাতিক বাজারেও যেতে পারে।”
ড্রাগন চাষে বদলে যাচ্ছে মহেশপুরের কৃষির চিত্র। এক সময়ের সাধারণ কৃষক আজ লাখপতি, কোটিপতি। এই সাফল্য দেশের অন্যান্য অঞ্চ
লের জন্যও অনুকরণীয় হতে পারে।
Leave a Reply