মহেশপুরে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলে সংঘর্ষ: উভয় পক্ষের আহত অন্তত ১৫
বিশেষ প্রতিনিধি মোঃ অমিদ হাসান
ভৈরবা বাজারে দুই পক্ষের মুখোমুখি সংঘর্ষে মোটরসাইকেল ভাঙচুর, গুরুতর আহত ৪ জন; সেনাবাহিনী ও পুলিশ নিয়ন্ত্রণে আনে পরিস্থিতি
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে দু’গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হন। শনিবার বিকেলে ভৈরবা বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া প্রতিবারের মতো শনিবার বিকেল ৪টার দিকে ভৈরবা বাজারের অফিসে যাওয়ার সময় তেলপাম্প এলাকায় হামলার মুখে পড়েন। অভিযোগ রয়েছে, বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সোজানুর রহমান সোজার অনুসারীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালায়।
দেশীয় অস্ত্র, লাঠি ও রড ব্যবহার করে হামলাকারীরা জিয়ার সঙ্গীদের উপর আক্রমণ চালায় এবং তাদের সঙ্গে থাকা আটটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এতে জিয়া গ্রুপের কমপক্ষে ৮ জন আহত হন।
অন্যদিকে, সোজা গ্রুপের দাবি—তারা ভৈরবা বাজারে নির্ধারিত একটি মানববন্ধনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ঠিক সে সময় জিয়া সমর্থিত লোকজন তাদের উপর হঠাৎ হামলা চালায়। এতে তাদের পক্ষেরও ছয় থেকে সাতজন আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের মধ্যে ৯ জনকে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা জানান, গুরুতর আহত মোস্তফা, শরীফুল, আসাদুজ্জামান ও হাসানুজ্জামানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
উল্লেখ্য, সংঘর্ষের মাত্র দুই দিন আগে উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে সোজানুর রহমানকে ইউনিয়ন সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় গত বৃহস্পতিবার সোজান সংবাদ সম্মেলনে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন এবং বিভিন্ন অভিযোগের জবাব দেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, নেতৃত্ব নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও গ্রুপিংয়ের কারণেই এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি আরও জটিল আকার নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, যদি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ দ্রুত হস্তক্ষেপ না করেন।
এ ঘটনায় জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
Leave a Reply